#Godin small things Never judge a book by its cover - god in small things
#Godin small things
Never judge a book by its cover - god in small things
সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাদবপুর থেকে অটো ধরে গড়িয়াহাট যাচ্ছি। অটো চালকের পাশেই বসেছি। প্রায় ষাট ছুঁই ছুঁই অটো চালকের বয়স। আমায় হঠাৎ বললেন " আজ খুব গরম। রাতে বৃষ্টি হতে পারে"। আমি সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়লাম। কিছুক্ষন বাদে যাদবপুর থানার সিগন্যালে অটো দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আবার বললেন " মানুষ আর আগের মত নেই বুঝলেন"। আমি একটু কৌতুহল বশতঃই জিজ্ঞাসা করলাম 'কেন'? তিনি জবাব দিলেন "কিছুদিন আগেই আমার অটোতে একজন ভদ্রলোক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। অন্য প্যাসেঞ্জাররা নেমে চলে গেল বুঝেলন। কেউ সাহায্য করলো না কোনো। শেষটায় আমি ভদ্রলোকের ঠিকানা নিয়ে ওনাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে এলাম"। ইতিমধ্যে সিগন্যাল সবুজ হয়ে গেছে। ভদ্রলোক আবার অটো চালনায় মন দিলেন।
কিছুক্ষন বাদে অটো চালাতে চালাতেই আবার বললেন " আসলে এখন আর কেউ কারো সাথে মেলামেশা করে না, আড্ডা মারে না। তাই এত স্বার্থপর সব। আমি তো তাই আমার ছেলেকে বলে দিয়েছি অফিস থেকে ফিরে রোজ আড্ডা মারবি। রামগড় এলাকায় থাকি। ছেলে রাত নটায় অফিস থেকে ফিরেই আমায় ফোন করে কোথায় আছি জেনে স্কুটি নিয়ে আড্ডা মারতে বেরোয়। তারপর রাত এগারোটায় যখন গাড়ি গড়িয়াহাটে গ্যারেজ করি তখন ওখান থেকে আমায় স্কুটিতে করে নিয়ে আসে।" জিজ্ঞাস করলাম 'কিসে চাকরী করে আপনার ছেলে'? উত্তর দিলেন ' আই বি এমের ইঞ্জিনিয়ার। ছ মাস হলো জয়েন করেছে। সেক্টর ফাইভে অফিস।' শহুরে সবজান্তা স্নবারি মানসিকতা নিয়ে একটু অবাক হয়েই ভদ্রলোকের দিকে তাকালাম। হয়তো বা অজান্তে ভাবলাম 'অটোওয়ালার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার!' ভদ্রলোক আবার বলতে থাকলেন "অনেক কষ্ট করেছি জানেন।পাঁচ বছর আগে এক লাখ ষাট হাজার টাকা দিয়ে ছেলেকে একটা প্রাইভেট কম্পিউটার কোর্স করাই। প্রায় চোদ্দ ঘন্টা ধরে অটো চালাতাম দেনা শোধ করার জন্য।" আমি বললাম 'যাক এত কষ্ট আপনার সার্থক। ছেলে আপনার দাঁড়িয়ে গেছে'। ভদ্রলোক বললেন "না দাঁড়ানোটা বড় নয় বুঝলেন। মানুষ হওয়াটা বড়ো। আমার ছেলে মানুষ হয়েছে। নিজের বাবা যে অটো চালায় এই পরিচয় দিতে ও লজ্জা বোধ করে না। বরং গর্ব বোধ করে। তাই বুঝি যে ওকে হয়তো মানুষ করতে পেরেছি"।
স্তম্ভিত হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কি অবলীলায় জীবনের শিক্ষা উনি দিয়ে গেলেন যে শিক্ষা হয়তো আমি বা আমরা অনেকেই আমাদের সন্তানকে দিতে পারি না। ইতিমধ্যে গন্তব্যস্থল এসে যাওয়ায় এবং তাড়া থাকায় অটো থেকে ভাড়া মিটিয়ে নেমে পড়লাম। এক অদ্ভুত ভালোলাগার আবেশ মনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো। জীবনের চলার পথে কত যে শিক্ষা পাওয়া যায়। ছোটবেলায় পৌরাণিক গল্পে দেবতাদের কাহিনী পড়তাম। বড় হয়ে বুঝতে পারি ওগুলো গল্পই। দেবতা নেই বা থাকলেও তাদের দেখা পাওয়া যায় না। আজ বুঝলাম দেবতারা আছেন। এনাদের মত মানুষের মধ্যেই আছেন।------
Never judge a book by its cover - god in small things
সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাদবপুর থেকে অটো ধরে গড়িয়াহাট যাচ্ছি। অটো চালকের পাশেই বসেছি। প্রায় ষাট ছুঁই ছুঁই অটো চালকের বয়স। আমায় হঠাৎ বললেন " আজ খুব গরম। রাতে বৃষ্টি হতে পারে"। আমি সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়লাম। কিছুক্ষন বাদে যাদবপুর থানার সিগন্যালে অটো দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আবার বললেন " মানুষ আর আগের মত নেই বুঝলেন"। আমি একটু কৌতুহল বশতঃই জিজ্ঞাসা করলাম 'কেন'? তিনি জবাব দিলেন "কিছুদিন আগেই আমার অটোতে একজন ভদ্রলোক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। অন্য প্যাসেঞ্জাররা নেমে চলে গেল বুঝেলন। কেউ সাহায্য করলো না কোনো। শেষটায় আমি ভদ্রলোকের ঠিকানা নিয়ে ওনাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে এলাম"। ইতিমধ্যে সিগন্যাল সবুজ হয়ে গেছে। ভদ্রলোক আবার অটো চালনায় মন দিলেন।
কিছুক্ষন বাদে অটো চালাতে চালাতেই আবার বললেন " আসলে এখন আর কেউ কারো সাথে মেলামেশা করে না, আড্ডা মারে না। তাই এত স্বার্থপর সব। আমি তো তাই আমার ছেলেকে বলে দিয়েছি অফিস থেকে ফিরে রোজ আড্ডা মারবি। রামগড় এলাকায় থাকি। ছেলে রাত নটায় অফিস থেকে ফিরেই আমায় ফোন করে কোথায় আছি জেনে স্কুটি নিয়ে আড্ডা মারতে বেরোয়। তারপর রাত এগারোটায় যখন গাড়ি গড়িয়াহাটে গ্যারেজ করি তখন ওখান থেকে আমায় স্কুটিতে করে নিয়ে আসে।" জিজ্ঞাস করলাম 'কিসে চাকরী করে আপনার ছেলে'? উত্তর দিলেন ' আই বি এমের ইঞ্জিনিয়ার। ছ মাস হলো জয়েন করেছে। সেক্টর ফাইভে অফিস।' শহুরে সবজান্তা স্নবারি মানসিকতা নিয়ে একটু অবাক হয়েই ভদ্রলোকের দিকে তাকালাম। হয়তো বা অজান্তে ভাবলাম 'অটোওয়ালার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার!' ভদ্রলোক আবার বলতে থাকলেন "অনেক কষ্ট করেছি জানেন।পাঁচ বছর আগে এক লাখ ষাট হাজার টাকা দিয়ে ছেলেকে একটা প্রাইভেট কম্পিউটার কোর্স করাই। প্রায় চোদ্দ ঘন্টা ধরে অটো চালাতাম দেনা শোধ করার জন্য।" আমি বললাম 'যাক এত কষ্ট আপনার সার্থক। ছেলে আপনার দাঁড়িয়ে গেছে'। ভদ্রলোক বললেন "না দাঁড়ানোটা বড় নয় বুঝলেন। মানুষ হওয়াটা বড়ো। আমার ছেলে মানুষ হয়েছে। নিজের বাবা যে অটো চালায় এই পরিচয় দিতে ও লজ্জা বোধ করে না। বরং গর্ব বোধ করে। তাই বুঝি যে ওকে হয়তো মানুষ করতে পেরেছি"।
স্তম্ভিত হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কি অবলীলায় জীবনের শিক্ষা উনি দিয়ে গেলেন যে শিক্ষা হয়তো আমি বা আমরা অনেকেই আমাদের সন্তানকে দিতে পারি না। ইতিমধ্যে গন্তব্যস্থল এসে যাওয়ায় এবং তাড়া থাকায় অটো থেকে ভাড়া মিটিয়ে নেমে পড়লাম। এক অদ্ভুত ভালোলাগার আবেশ মনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো। জীবনের চলার পথে কত যে শিক্ষা পাওয়া যায়। ছোটবেলায় পৌরাণিক গল্পে দেবতাদের কাহিনী পড়তাম। বড় হয়ে বুঝতে পারি ওগুলো গল্পই। দেবতা নেই বা থাকলেও তাদের দেখা পাওয়া যায় না। আজ বুঝলাম দেবতারা আছেন। এনাদের মত মানুষের মধ্যেই আছেন।------
Comments
Post a Comment