হাম আপকে দিল মে রাহেতে হ্যাঁয় পর্ব -১
এখন সকাল এগারোটা | উত্তর কলকাতার এই কফিশপটায় এই সময়ে মোটামুটি ভিড় | তবে একদম কোণার টেবিলে বসে থাকা অনিকেতের এখন এই হালকা ভিড়ে এয়ারকন্ডিশন লাগানো কফিশপেও কেমন বিন্দু বিন্দু ঘাম হচ্ছে চিন্তায় | সব মায়ের জন্য | কেন যে ওকে সব সময় এইভাবে ফাঁসিয়ে দেয় , বুঝতে পারে না !
কথাটা ভাবতে ভাবতেই উল্টো দিকে বসে থাকা অনিন্দ একটু হালকা গলায় বলে উঠলো ওকে ,
- " এই অতো ভাবিস না তো | নে , কোল্ড কফি খেয়ে মাথাটা ঠান্ডা কর | টেনশন করে কোনো লাভ নেই | ঠান্ডা মাথায় একটা সলিউশন খুঁজতে হবে তোর প্রব্লেমের | বুঝলি |"
না , কথাটা শুনে অনিকেতের মাথা তো ঠান্ডা হলোই না , উল্টে পারদ আরো চড়লো | বেশ উত্তেজিত হয়েই বললো ও ,
- " সেই ! তুই তো মাথা ঠান্ডা রাখবিই | তোর মাথায় তো আর বিয়ের খাড়া ঝুলছে না | আমার প্রব্লেমটা তোর বোঝার কথা নয় | মা এবার পণ করেছে , এই বৈশাখে আমার বিয়ে দিয়েই ছাড়বে | সম্বন্ধের পর সম্বন্ধ নিয়ে আসছে | মায়ের হাই প্রেশারের জন্য কিছু মুখের ওপর বলতেও পারছি না ! কিন্তু বিয়ে আমি কিছুতেই করবো না | মানুষ জীবনে ভুল একবারই করে | আমার সেটা করা হয়ে গেছে দু বছর আগে | এরপর আর সিরিয়াসলি লাইফে কোনো মেয়ের দরকার নেই আমার | এন্ড প্লিজ , এসব শুনে ওই পুরোনো লাইনটা আওরাস না যে 'সব মেয়েরা এক হয় না |' .. কারণ কোনো লাভ হবে না | আমি আর সেই পরীক্ষায় যাবো না যে কোন মেয়ে এক , আর কোন মেয়ে আলাদা |"
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে শেষ করে অনিকেত এবার কোল্ড কফির একটা সিপ্ নিলো |
অনিন্দ ওর এতো বড়ো বক্তব্য শুনে কিছুক্ষন চুপ থেকে অবশেষে বলে উঠলো ,
- " বুঝেছি | চিন্তা করিস না | তোকে সেই পুরোনো কথাটা আর বলবো না যে সব মেয়ে সমান হয় না | কারণ এই লাস্ট দু বছরে যখন শুনিসনি , তখন আর আমার কথায় বিশ্বাস হবে না জানি | তুই চির ব্রহ্মচর্যই পালন করবি | যাই হোক , তোকে আজ একটা নতুন কথা বলি | কাল রাত থেকে ভেবে ভেবে আমি মাথায় একটা আইডিয়া বার করেছি | তোর প্রব্লেমের পার্মানেন্ট সলিউশন| একচুয়েলি কাল রাতে সলমান খানের একটা সিনেমা দেখছিলাম , ' ম্যায়নে পেয়ার কিঁউ কিয়া ..' | সিনেমাটা দেখেই আইডিয়াটা মাথায় এলো | তোর একটা টেম্পোরারি বৌয়ের দরকার | যে কিছুদিন তোর বাড়িতে থাকবে , শাঁখা সিঁদুর পরে বৌ সাজার এক্টিং করবে , তারপর বাংলা সিরিয়ালের ভিলেনের মতন দর্জাল বৌয়ের এক্টিং করে তোর মায়ের মাথা খারাপ করে দেবে | তোর যেমন ওই একটা ফালতু মেয়ের জন্য জীবনে মেয়ে , প্রেম এইসবের থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে , সেরকম কাকিমারও একটা দজ্জাল বৌয়ের জন্য বিয়ে , বৌমা , সংসার এইসবের ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাবে | তারপর নিজেই তোকে বলবে ডিভোর্স দিয়ে দিতে | আর তোর ঝামেলা সল্ভড | কেমন আইডিয়া ?"... ভ্রু নাচিয়ে এই লাস্ট কথাটা বললো অনিন্দ |
অনিকেত এবার এক কথায়ই উত্তর দিলো ,
- " অত্যন্ত জঘন্য | "
অনিন্দ এরকম রিয়েকশনের জন্য ঠিক রেডি ছিল না | তাই একটু উত্তেজিত হয়েই বললো ,
- " জঘন্য ! কোন এঙ্গেল থেকে জঘন্য ? এর থেকে ভালো আইডিয়া আর কিছু হয় না বুঝলি |"
অনিকেত কথাটা শুনে এখন একটু রেগেই উত্তর দিলো ,
- " লাইফটাকে তুই সিনেমার প্লট পেয়েছিস ? কনট্র্যাক্ট ম্যারেজ ওই টিভি ফিল্মেই বেশ ভালো লাগে | একচুয়াল লাইফে এসবের কোনো অস্তিত্ব নেই | আর মানলাম , মায়ের চোখে যদি আমার বিয়েটা সুখের না হয় , তাহলে মা নিজে থেকেই আমাকে ডিভোর্স নিয়ে নেয়ার কথা বলবে | কিন্তু এরকম মেয়ে পাবো কোথায় ? যে আমার সাথে কয়েক মাস রুম শেয়ার করবে , ফেক ম্যারেজের এক্টিং করবে ! তুই নিয়ে আসতে পারবি কোনো সুস্মিতা সেন কে ?"
এতগুলো কথা হঠাৎ শুনে অনিন্দর গায়ে লেগে গেছে খুব | ওর মতন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এতো বড়ো নাম করা একজন ডিরেক্টরের প্লটকে নিয়ে এইভাবে ছোট করলো ! ওর এক একটা আইডিয়া লাখ লাখ টাকায় বিক্রি হয় দেশে | সেখানে ও একটা রিয়্যাল লাইফ স্টোরি হ্যান্ডেল করতে পারবে না ! তাই বেশ জোর দিয়েই বললো ,
- " ঠিক আছে | মেয়ে খোঁজার দায়িত্ব আমার | তুই শুধু টাকাটা দিস | সুস্মিতা সেন হয়তো আমি জোগাড় করতে পারবো না , তবে যাকে নিয়ে আসবো সে তোর কয়েক মাসের বৌ হওয়ার জন্য যথেষ্ট পারফেক্ট হবে , চ্যালেঞ্জ | তবে প্ল্যানটা সাকসেসফুল হওয়ার পর , আমার একটা ফ্রি লন্ডন ট্রিপ চাই , তোর পকেট থেকে | রাজি ?"
অনিকেত এবারও আর এক সেকেন্ড সময় নষ্ট না করে বললো ,
- " লন্ডন ট্রিপ ! নিশ্চই | রাজি | বাট ইন ইউর ড্রিমস , কারণ এই প্ল্যানটা কখনো সাকসেসফুল হবে না | আমি জানি |"
এইসব কথাবার্তার পর তিন সপ্তাহ কেটে গেছে | অনিকেতের এর মধ্যে দু দুটো সম্বন্ধ দেখতে যাওয়াও হয়ে গেছে প্রায় জোড় জবরদস্তি করে | আর এতো বড়ো একজন বিজনেসম্যান ও | মেয়েদের লাইন পরে আছে আসলে | একটা সম্বন্ধ কাটায় , আর একটা ঠিক তার পরের দিনই দরজায় এসে হাজির হয় | সত্যি বুঝতে পারছে না মাথা খাটিয়ে আর কি কি অজুহাত বার করবে বিয়েটাকে আটকে রাখার জন্য ! মা মনে হয় ওকে আর একটুও শান্তিতে টিকতে দেবে না এই জগৎ সংসারে ! ধুর , কথাটা ভেবেই সকাল সকাল মুডটা অফ হয়ে গেলো | সত্যি , অনিন্দর আইডিয়াটা বোগাস হলেও ওই দজ্জাল বৌ এর একটা ডেমো এনে যদি মা কে দেখাতে পারতো এখন , তাহলে একচুয়ালি হয়তো কাজ হতো ওষুধে | নিজে থেকে বিয়ের আইডিয়াটা ড্রপ করে দিতো | তবে যাই হোক , সেই সেইদিনের পর থেকে এই ডেমো আইডিয়া প্রদানকারী অনিন্দর তো আর কোনো পাত্তা নেই এতোদিনেও ! কেমন যেন ভ্যানিশ হয়ে গেছে ছেলেটা | হয়তো ওই প্লটটা অনিকেতের জীবনে এপ্লাই করতে না পেরে নতুন কোনো সিনেমার স্ক্রিপ্টে এপ্লাই করতে ব্যস্ত ! ঐসব লেখা নিয়েই সেই পাবলিক বেপাত্তা | এইসবই ভাবছিলো এক মনে , তখনই অনিকেতের ফোনটা হঠাৎ বেজে উঠলো | স্ক্রিনে সেই পাবলিকেরই নাম্বার |
অনিকেত এক সেকেন্ড অপেক্ষা না করেই ফোনটা তুললো ,
- " কিরে ? তুই আছিস এই পৃথিবীতে এখনো ? না কি আমার কাছ থেকে ফ্রি তে লন্ডন ট্রিপ পাবি না বলে দুঃখে মঙ্গলে চলে গেছিস ?"
একটু হেসেই বললো কথাটা ও | তবে ওপার থেকে ভেসে এলো একটা গম্ভীর গলা ,
- " মঙ্গলে যাওয়ার আগে আমি লন্ডন যাবো | তোর টাকায় | মেয়ে জোগাড় হয়ে গেছে | আজ সন্ধ্যে সাতটায় ওই আগেরদিনের কফি শপেই এপয়মেন্ট ফিক্সড করেছি | এক মিনিটও যেন লেট্ না হয় , মনে থাকে যেন | তোর সঙ্গে এই চ্যালেঞ্জের চক্করে আমি তিন উইক নিজের সব কাজ বন্ধ রেখে শুধু মেয়ে খুঁজেছি | এতো এফোর্ট আমি আমার নিজের সিনেমার হিরোইন খোঁজার জন্যও কখনো দিইনি | তাই বি ইন টাইম ... ওকে |"
কথাটা শেষ করেই অনিন্দ ফোনটা কেটে দিলো হুট্ করে | অনিকেতের কোনো প্রত্তুত্যরের আর অপেক্ষাই করলো না ! যাহ বাবা ! ও কি তাহলে সিরিয়াসলি সেইদিন কথাগুলো বলেছিলো ! কোন মেয়েকে জোগাড় করে আনলো আবার কে জানে ! ছোট থেকে এই ছেলেটার এই এক স্বভাব | কোনো কথা কমপ্লিট করে না | সিনেমার মতন সব সময় একটা সাসপেন্স বজায় রাখার চেষ্টা করে | যত সব |
যাই হোক , এইসব কথা প্রথমে মনে হলেও অনিকেত সেই আগের দিনের মতন অনিন্দর আইডিয়াটাকে উড়িয়ে দিতো পারলো না আজ আর | সত্যি , মা যেইভাবে উঠে পরে লেগেছে , তাড়াতাড়ি কিছু না করলে ওকে বিয়ে দিয়েই ছাড়বে হয়তো আর এক দুমাসের মধ্যে | তাই কফিশপে চোখ বন্ধ করেই চলে গেলো ও , সাতটা বাজার পনেরো মিনিট আগেই | অনিন্দও চলে এসেছে দেখলো এখন | সেই পুরোনো কোণার টেবিলেই বসে | অনিকেত এবার জোরে পা চালিয়ে ওর সামনে গিয়ে বসলো | তারপর বেশ উত্তেজিত হয়েই বললো ,
- " সব সময় হাফ কথা বলে এইভাবে ছেড়ে দিস কেন বল তো ? আর তোকে সারাদিনে তারপর কতবার আমি ফোন করলাম ! একবারও ফোনটা রিসিভ করলি না | তোর এই এটিটিউডটা না সব সময় নেয়া যায় না বুঝলি | আর কোন মেয়ে জোগাড় করেছিস তুই ? কি নাম ? কি ব্যাকগ্রাউন্ড ? সব ডিটেলস এ বল আমাকে |"
কথাটা ঠান্ডা মাথায় শুনে অনিন্দ দু সেকেন্ড সময় নিলো নিজেকে একটু গুছিয়ে নিতে | তারপর শান্তভাবে বললো ,
- " শোন , রাগিস না | তোকে সকাল থেকে কিছু ডিটেলস বলিনি কারণ বললে তুই হয়তো এই মিটিংটায়ই আসতিস না , তাই | আসলে এই ফেক বৌ সাজার জন্য যা যা রিকোয়ার্মেন্টস দরকার , সেটা তো আর কোনো রেপুটেড এক্ট্রেস ফুলফিল করবে না | মানে টাকার জন্য কে ই বা তোর সঙ্গে মাসের পর মাস একই ঘরে ! তাই আমি আর্টিস্টদের থেকে একটু নিচে নেমে খোঁজটা চালিয়েছি | তোর কোনো প্রব্লেম হবে না এডজাস্ট করতে | মেয়েটা ছোটবেলায় স্কুল টুলে নাটকও করেছে | এক্সটিংয়ের টেস্ট আমি নিজে নিয়েছি | যথেষ্ট চালিয়ে নেয়ার মতন | শুধু ব্যাকগ্রাউন্ডটা নিয়ে তুই বেশি মাথা ঘামাস না | মেয়েটা এক্সটিংয়ের সাথে সাথে স্কুলে মনে হয় নাচও শিখতো | তাই প্রফেশনটা বার ডান্সারের |"
না , আর কোনো কথা এগোতে দেয়নি অনিকেত | ওকে মাঝ রাস্তায়ই থামিয়ে দিয়ে গলার ভলিউম বাড়িয়ে বেশ রেগে বলেছিলো ,
- " তোর মাথার ঠিক আছে ! বার ডান্সার ! তুই চাস আমি আমার বাড়িতে একজন বার ডান্সারকে নিয়ে গিয়ে মাসের পর মাস রাখবো | আবার তার সাথে একই ঘরে থাকবো ! বুঝেছি | তোর লন্ডনের টিকিট চাই তো | আমি সেটা তোকে ফ্রিতেই দেব , চিন্তা নেই | তবে প্লিজ , এরপর আমার জন্য কোনো কিছু ভাবার কোনো কষ্ট আর করিস না দয়া করে | গুড বাই |".... কথাটা বলেই অনিকেত উঠে যাচ্ছিলো টেবিল থেকে এক সেকেন্ডে | কিন্তু অনিন্দ ওর হাতটা ধরে নিলো | ওকে কিছুতেই ও এই মুহূর্তে এই কফিশপ ছেড়ে বেড়োতে দেবে না | তাই অনুনয় বিনয়ের সুরে বললো ,
- " প্লিজ , এটলিস্ট মেয়েটাকে একবার দেখ | না দেখে তোকে আমি এখান থেকে কিছুতেই যেতে দেব না | আমি একজন ডিরেক্টর ভুলে যাস না | আমি কোনো প্লটের ওপর কাজ করলে বেস্টটাই দেব | তোর সাথে মানানসই মেয়েই কাস্ট করবো | তুই শুধু একটু বিলিভ কর আমাকে |"
অসহ্য লাগছে এবার অনিকেতের এখানে | ও তাই নিজের হাতটা এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো |
-" আগেই বলেছিলাম আমার লাইফটা কোনো সিনেমা নয় | তবে তোর কাছ থেকে এরকম ইনসেন্সিটিভি একটা কাজ এক্সপেক্ট করিনি |"
.. কথাটা শেষ করেই অনিকেত রাগে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো , তবে টেবিল থেকে দু পা এগিয়েই হঠাৎ থমকে গেলো |
সাদা রঙের সালোয়ার কামিজ , একদিকে বিনুনি , চোখের কোণে হালকা কাজল, আর কপালে একটা ছোট্ট টিপ্ , সব মিলিয়ে ফর্সা মিষ্টি নিষ্পাপ একটু মুখ , ওর দিকেই নিস্পলকভাবে তাকিয়ে | কথাটা ভাবতে ভাবতেই পাশ থেকে অনিন্দর গলা কানে এলো ,
- " এই তো তিলোত্তমা | চলে এসেছে | বাহ্ , একদম পাঁচটাতেই ঢুকলে ? বেশ পাংচুয়াল তো |"
কথাটা শুনেই একটু যেন ঝটকা লাগলো ! বার ডান্সারের নাম তিলোত্তমা ! শিলা , মুন্নি , জুলি এইসব হওয়ার কথা ছিল তো ! তবে এখন আর কফিশপটা থেকে বেড়োনো হলো না ওর | ভেতরে যা ই থাক , মেয়েটাকে বাইরে থেকে দেখতে বেশ ভদ্র | তাই এর সামনে চাইলেও অভদ্রতা করতে পারলো না অনিকেত | একটু গম্ভীর হয়েই টেবিলে বসে পড়লো আবার | ততক্ষনে তিলোত্তমাও ওদের টেবিলে এসে হাজির | অ
নিন্দই তখন হালকা হেসে বললো ,
- " তিলোত্তমা এই লোকটাই তোমার টেম্পোরারি বর | নাম তো আগেই জানো, অনিকেত | আর ছবিও নিশ্চয়ই পেপার , ম্যাগাজিন এইসবে দেখেছো | এতো বড়ো বিজনেসম্যান | "
.. কথাটা শেষ হতেই তিলোত্তমা এবার আস্তে গলায় উত্তর দিলো ,
- " হ্যাঁ , দেখেছি | পেপারে ম্যাগাজিনে অনেক জায়গায়ই ছবি দেখেছি ওনার | "
... এবার গলাটা প্রথম শুনলো অনিকেত মেয়েটার | না , দেখতে যেরকম ভদ্র , কথা বলার ধরণও সেরকমই | পড়াশোনা জানা মনে হচ্ছে ! কথাটা ভাবতেই আবার ওই বার ডান্সারের কথাটা মনে পরে গেলো | না , প্রকৃত শিক্ষিত হলে কি আর ঐসব কাজ করে ! আর কে বলতে পারে , এই ভদ্র চেহারার আড়ালেই হয়তো অন্য কোনো রূপ ! এসব ফিল্ডের মেয়েদের তো আরোও কোনো বিশ্বাস নেই | তাই অনিকেত এবার বেশ গম্ভীরভাবেই বললো ,
- " থাক | বুঝেছি আমাকে চেনো | তবে রিচ বিজনেসম্যান ভেবে নিজের দর বাড়িও না কিন্তু | টাকার ব্যাপারটা আমি খুব ভালো বুঝি | তো তুমি কিভাবে পেমেন্ট চাও ? তোমাদের কি আবার ঘন্টায় চার্জ ? আমি পঁচিশ লাখের বেশি দিতে পারবো না , আগে থেকেই বলে দিলাম |"
কথাটা শেষ করে অনিকেত আনমনে খেয়াল করলো তিলোত্তমার মুখটা কেমন অন্ধকার হয়ে গেছে এখন | ও কি তাহলে একটু বেশিই রুডলি বললো ! তবে এই ধরণের মেয়েরা তো এইসব টোন শুনে অভ্যস্ত | আর টাকার জন্য এরা সব করতে পারে | তাই প্রথম থেকেই শক্ত থাকা উচিত |
এইসব ভাবনার ভিড়েই তিলোত্তমা আবার আস্তে গলায় বলে উঠলো ,
-" আমার পঁচিশ লাখের দরকার নেই | দশ লাখ হলেই হবে | আর আমি কোনো প্রস্টিটিউট নোই | বার ডান্সার | আমি ঘন্টায় টাকা নিই না | মাস গেলে হোটেল থেকেই একটা স্যালারি দেয়া হয় আমাকে | তবে দশ লাখের কম হলে আমি কাজটা করতে পারবো না | আর টাকাটা আমার আর্জেন্ট দরকার |"
কথাগুলোর মধ্যে কেমন একটা দৃঢ়তা ছিল ওর | অনিকেতও কয়েক সেকেন্ড চুপ হয়ে গেলো | তখন আবার তিলোত্তমা বলে উঠলো ,
- " আমাকে ফ্রড ভাববেন না প্লিজ | আমার ভোটার কার্ড , প্যান কার্ড , বাড়ির ডিটেলস এড্রেস সব আপনি দেখেই টাকাটা দিন | আর লিগ্যাল পেপারে আপনি তো সই করিয়েই নেবেন | দরকার হলে পুলিশ ভেরিফিকেশনও করতে পারেন | আমার কোনো প্রব্লেম নেই | তবে টাকাটা আমাকে এই মাসেই দিতে হবে | আর আমি সত্যি আপনার কাজ কমপ্লিট না করে কোথাও যাবো না | সারাক্ষণ আপনার বাড়িতেই থাকবো | শুধু সন্ধ্যেবেলা ছটা থেকে আটটা অব্দি দু ঘন্টা সপ্তাহে তিনদিন অন্তত আমাকে ছাড়তে হবে | বাকিদিনগুলো চব্বিশ ঘন্টার জন্যই আমি আপনার বাড়িতে থাকবো | কোনো প্রব্লেম হবে না |"
অনিকেত এতো সব শুনে ঠিক কি বলবে বুঝতে পারলো না | তবে মেয়েটাকে ওপর ওপর দেখে সত্যি মনে হলো কাজ হয়তো চালানো যায় একে দিয়ে | আর টাকার চিন্তা নেই | ও এমনি এমনি তো আর এতো বড়ো বিজনেস চালায় না | কোথাও টাকা ইনভেস্ট করার আগে ভালো করেই ভেরিফিকেশন করে নেয় | তবে মেয়েটার কথা শুনে মনে হচ্ছে ওপর থেকে যথেষ্ট পলিশড | ভেতরটা যা ই থাক | তাই অনিন্দর কথায় রাজি হয়েই ফিরলো সেদিন বাড়ি | তবে মনে একটা অস্বস্তি রয়েই গেলো সেই | যতই বাইরে থেকে ভদ্র দেখতে হোক , আসলে তো কাজটা মদ খাওয়া লোকজনের সামনে শরীর দেখিয়ে নাচা | এসব মেয়েদের কি সত্যি পুরোপুরি বিশ্বাস করা যায় ! না , একে বাড়িতে এনেও শান্তি থাকবে না | সব সময় নজরে নজরে রাখতে হবে | কোনো রকম রিস্ক নেয়া যাবে না |
সেদিনের পর অনিন্দর লেখা গল্পটা যেন রাজধানী এক্সপ্রেসের স্পিডে এগোলো বাস্তবে | ওই সপ্তাহের রবিবারই হঠাৎ অনিকেত তিলোত্তমাকে বাড়ি নিয়ে এলো | মা তো পুরো সারপ্রাইজড ! ছেলে সত্যি প্রেম করেছে , আর মেয়ে খোঁজার ঝামেলা রইলো না , এইসব যেন ভাবতেই পারছে না ! আর তিলোত্তমার মতন মিষ্টি দেখতে মেয়েকে এক দেখায় যে কারোরই পছন্দ হয়ে যায় | তাই অনিকেতের মায়ের আপত্তির তো কোনো কারণ থাকতেই পারে না | উল্টে অনিন্দর বুদ্ধিতে তিলোত্তমার বাবা মা কে ছোটবেলায় মেরে ফেলে সিন্ থেকেই আউট করে দেয়া হয়েছে | ও ছোটবেলা থেকে একটা অনাথ আশ্রমেই বড়ো হয়েছে একা একা , আর তারপর চাকরি নিয়ে অনিকেতদের অফিসেই জয়েন করেছিল , আর সেখানেই প্রেম | এই প্লটটা লেখার ফলে তিলোত্তমার সাথে একটা দুঃখী মেয়ের ইমেজও এড হয়ে গেছে | আর তাতেই অনিকেতের মা গলে জল | এই মেয়েকে নিজের মেয়ে বানিয়ে এই বাড়িতেই নিয়ে আসবে এই ডিসিশনটা তাই এক দেখাতেই উনি নিয়ে নিয়েছেন | আর ব্যাস , প্ল্যান সাকসেসফুল |
আর শুধু তাই না , অনিকেত যে শর্তটা দিয়েছিলো , সেটাতেও মা রাজি | ও বিয়ে একদম ছিমছাম সাধারণভাবে করবে , কোনো বেশি বড়ো অনুষ্ঠান , অনেক লোক ডেকে নয় | একটা প্রাইভেট সেরিমনি হবে ব্যাস | কথাটা মা কে বলতে মা দু ঘন্টা মৌন ব্রত নিয়ে অনেক ভেবে চিন্তে লাস্টে হ্যাঁ ই বলে দিয়েছে | আসলে এই ছেলে যে বিয়ে করছে অবশেষে এটাই অনেক | নইলে এতদিন তো কেমন বিয়ের কথা শুনলেই উল্টো রাস্তায় হাঁটতে শুরু করতো ! তাই পাঁচ হাজার লোক ডেকে করুক , কি পাঁচ জন , এই নিয়ে আর বেশি মাথা ব্যাথা করে লাভ নেই ওনার |
তবে এই ফেক বিয়ের আগের দিনই আট মাসের এগ্রিমেন্টটাও সাইন করে দিলো তিলোত্তমা | তবে অনিকেত সাইন করার ঠিক আগে ওকে বেশ গম্ভীর গলায় আরেকবার মনে করিয়ে দিলো ,
- " পেপারটা সাইন করার আগে চাইলে আরেকবার ভেবে নিতে পারো | এই লিগ্যাল পেপারে সাইন করার পর তুমি মাঝ রাস্তায় কোথাও চলে যেতে পারবে না | আর এক্সট্রা টাকাও কখনো ক্লেইম করতে পারবে না আমার কাছ থেকে | তাহলে তোমায় জেল অব্দি আমি টেনে নিয়ে যেতে পারি কিন্তু | "
কথাটা শুনে সেদিন তিলোত্তমা কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে একটু দৃঢ় গলায়ই উত্তর দিয়েছিলো ,
- " জানি | তবে আপনার কাছ থেকে টাকা যখন নিচ্ছি তখন মাঝ রাস্তায় কাজটা ছেড়ে যাবো না | আর এক্সট্রা টাকাও চাইবো না | তাই এই পেপারটায় সাইন করতেও আমার কোনো প্রব্লেম নেই | " কথাটা শেষ করেই তিলোত্তমা নিজের নামটা সই করে দিয়েছিলো এগ্রিমেন্টে | আর তার পরের দিনই শাঁখা সিঁদুর পড়ে একটা মিথ্যে বিয়ের অভিনয় করতে হাজির হয়েছিল অনিকেতদের বাড়িতে |
যাই হোক , লোকজন যখন সামনে ছিল তখন হাসি হাসি মুখে অভিনয়টা ঠিকই ছিল | অনিকেতের চাপ লাগতে শুরু করলো রাতে একই ঘরে ঘুমোতে হবে এটা ভেবে | একজন বার ডান্সারের সঙ্গে একই ঘরে ! কখনো ভাবেনি লাইফে এরকম সিচুয়েশনও আসবে ! যদি মেয়েটা রাতে ইন্টিমেট হওয়ার চেষ্টা করে ! ইচ্ছে করে রিভিলিং ড্রেস পরে ওকে সিডিউস করার চেষ্টা করে ! এসব মেয়েদের তো কোনো ভরসা নেই | কথাটা ভেবেই অনিকেত ভেতরে ভেতরে খুব স্ট্রিক্ট হয়ে গেলো এখন | না , বেড রুমে ঢুকেই প্রথমে বলবে যে ও যেন অনিকেতের থেকে ডিসটেন্স মেন্টেন করে | চাইলে খাটে শুতে পারে | অনিকেত তাহলে সোফায় ঘুমিয়ে পরবে | আর ওর সাথে যেন এক হাত দূরত্ব রেখেই চলে সব সময় | নিজের লিমিট ক্রস করার কথা ভুল করেও না ভাবে , সেটা অনিকেত সহ্য করবে না | এইসব অনেক ডায়লগ মনে মনে রেডি করে ও গিয়েছিলো ঘরে সেদিন | তবে দরজাটা খুলে হুট্ করে একটু থমকে গিয়েছিলো নিজে | এরকম একটা দৃশ্য আসলে এক্সপেক্ট করেনি একদম | সিডিউস ফিডিউস তো অনেক দূরে থাক ! তিলোত্তমা মাটিতে ব্ল্যাংকেটটা পেতে বালিশ নিয়ে একেবারে ঘুমের দেশে | অনিকেতের জন্য খাট , সোফা সব খালি পরে আছে | না , এই সময় এই মেয়েটাকে নিয়ে আর খারাপ কোনো চিন্তা মাথায় এলো না ওর কিছুতেই | বরং হঠাৎ খেয়াল করলো ঘুমের মধ্যে মুখটা আরো বেশি নিষ্পাপ মনে হচ্ছে যেন | একে আর যাই হোক , এই মুহূর্তে বার ডান্সার ভাবতে কিছুতেই ইচ্ছে করছে না অনিকেতের | তবে সেই রাতে ও বালিশটা নিয়ে নিজেও সোফাতেই শুয়েছিল | একটা মেয়ে মাটিতে ঘুমোবে , আর ও হাত পা ছড়িয়ে খাটে , এতটা পাথর এখনো তৈরী করতে পারেনি নিজেকে |
এরপরের দিন তবে ব্রেকফাস্ট টেবিলে আরেকবার শকড হলো অনিকেত | আজকে লুচি আলুরদম তিলোত্তমাই রান্না করেছে | কথাটা মা বলতেই ভ্রুটা একটু কুঁচকে গিয়েছিলো ওর | একটা বাইরের মেয়ের একদিনেই একেবারে রান্নাঘর অব্দি পৌঁছে যাওয়ার কি আছে ! লিমিটটা সব সময় মাথায় রেখেই চলা উচিত | এইসবই ভাবছিলো | তবে আলুরদমটা টেস্ট করে আর এতো গভীর ভাবনায় ডুবে থাকতে পারলো না ও ! এতো ভালো রান্না ! ওর বাড়িতে এতো এতো কুকের হাতেও এরকম টেস্ট নেই ! মুখে যদিও কোনো সুনাম করেনি | তবে মনে মনে রান্নার ব্যাপারে অন্তত ইমপ্রেস না হয়ে পারলো না | তবে খাওয়া শেষ হওয়ার পরই আর একটা কথা মাথায় এলো হঠাৎ | এইসব তিলোত্তমার কোনো গেম না তো ! ভালো ভালো রান্না করে , একটা নিজের ভালো ইমেজ তৈরী করে ও অনিকেতকে ইমপ্রেস করতে চায় , ওর কাছ থেকে আরো টাকা হাতানোর জন্য ! না কি ও এই বাড়ির পার্মানেন্ট বৌ হওয়ার প্ল্যান করছে ! কথাগুলো মনে আসতেই হঠাৎ ভেতরে কেমন একটা রাগ হলো | আর অনেকদিনের পুরোনো একটা মুখ মনে পরে গেলো ওর | তৃষাও তো ওর চোখে সব সময় ভালো সাজারই চেষ্টা করতো | দু বছর ধরে কি সরল ভালো মেয়ের একটিংটাই না করেছিল ! জাস্ট ওর সোর্স গুলোকে কাজে লাগিয়ে মডেলিং ইন্ডাস্ট্রিতে নাম করার জন্য | পাশে তো আরো একটা ছেলের সঙ্গে সমানে রিলেশন রেখে যাচ্ছিলো তাল মিলিয়ে | কথাগুলো মনে পড়তেই রাগটা যেন আরো বেড়ে গেলো তিলোত্তমার ওপর | ও তাই আর এক সেকেন্ডও ওয়েট না করে সোজা নিজের বেডরুমে গেলো | তিলোত্তমাকে নিজের জায়গাটা বুঝিয়ে দেয়াটা এখন খুব দরকার | কথাটা ভেবেই ও জানলার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা চুপচাপ মেয়েটার সামনে বেশ ঝাঁঝালো গলায় গিয়ে বললো ,
- " নিজেকে কি মনে করো ? খুব স্মার্ট ! ভালো রান্না করে সবাইকে ইমপ্রেস করতে চাও ? কার পার্মিশনে তুমি আজ প্রথম দিন এসেই রান্নাঘরে ঢুকে পড়লে ! তোমার মতন একজন বার ডান্সারকে যদি প্রয়োজন না থাকতো তাহলে দু সেকেন্ডও চোখের সামনে টলারেট করতাম না আমি | তাই নিজের লিমিটটা মাথায় রেখে চলো | আর এখানে তুমি কিন্তু কাউকে ইমপ্রেস করতে আসোনি নিজের রান্না দিয়ে | অনিন্দর স্ক্রিপ্ট লেখা আর কিছুদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে | তারপর ডায়লগগুলো মুখস্ত করে দর্জাল বৌয়ের এক্টিং করে এই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়াটাই তোমার কাজ | কথাটা মাথায় রেখো সব সময় | আর নিজের লিমিটের মধ্যে থাকার চেষ্টা করো |"
কথাগুলো শেষ করেই সেদিন অনিন্দ ঘর থেকে বেড়িয়ে এসেছিলো | রাগে মুখটা লাল হয়ে গেছে এখন ওর | তবে ড্রইং রুমে এসে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছিল মা কে দেখে | মা একটু ব্যস্ত হয়ে ওর কাছে এসে ওকে একটা বার্নল ধরিয়ে দিয়েছিল হঠাৎ |
" এই নে , এটা গিয়ে তিলোত্তমার কাছে দিয়ে আয় তাড়াতাড়ি | সকালবেলা ওই লুচি ভাজতে গিয়ে তেল ছিটকে ওর হাতটা পুড়ে গেছিলো জানিস | এমন মেয়ে , নিজে থেকে কিছু বলেওনি প্রথমে | আমি দেখলাম বলে তাই জানতে পারলাম | ইশ , অনেকটা পুড়ে গেছে ! এখন ভেবে আমার নিজেরই খারাপ লাগছে | ওকে সকাল সকাল রান্না করতে তো আমিই বলেছিলাম | ওই বিয়ের পর নতুন বৌয়ের হাতে বানানো কিছু একটা খেতে ইচ্ছে করেছিল তাই | যাই হোক তুই তাড়াতাড়ি গিয়ে ওষুধটা দিয়ে আয় |"
কথাগুলো শুনে অনিকেত ঠিক কি বলবে বুঝতে পারছিলো না সেই সময়ে ! রাগটা হঠাৎ উল্টে নিজের ওপরই হচ্ছিলো তখন | না জেনে শুনে একজনকে অতগুলো কথা শুনিয়ে দিলো সকাল সকাল ! আর মেয়েটাও চুপচাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব কিছু শুনে গেলো অতক্ষণ ! ওকে কোনো উত্তর অব্দি দিলো না ! কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই আবার ও নিজের ঘরে গেলো | এবার তিলোত্তমা ওকে দেখে খাট থেকে উঠে কেমন জড়োসরো হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো এক জায়গায় | অনিকেত এবার একটু আস্তে গলায় জিজ্ঞাসা করলো ওকে ,
-" তোমার সকালে হাত পুড়ে গিয়েছিলো ? মা বললো |"
তিলোত্তমা তখন এক কথায়ই উত্তর দিলো ,
- " না , এমন কিছু হয়নি |ঠিক আছি |"
এবার অনিকেত একটু জোড় দিয়ে বললো ,
- " দেখি হাতটা |"
তিলোত্তমা একটু সময় নিয়ে একটু ইতঃস্তত করে এবার ওর হাতের ওপর থেকে শাড়ির আঁচলটা তুললো , আর অনিকেত হঠাৎ ঘাবড়ে গেলো | বেশ কিছুটা জায়গা পুরো লাল হয়ে পুড়ে গেছে ওর | অনিকেত এবার বেশ একসাইটেড হয়ে বলে উঠলো ,
- " তোমার এতটা জায়গা পুড়ে গেছে ? আর তুমি এতক্ষন ধরে কাউকে একবারও দেখাওনি ! সেপটিক অব্দি হয়ে যেতে পারে ! চলো ডাক্তারের কাছে চলো এখনই |"
তিলোত্তমা এবার সঙ্গে সঙ্গে ওকে শান্ত করার জন্য কিছু কথা সাজিয়ে উত্তর দিলো ,
- " এসবের কোনো দরকার নেই | আমি বরফ দিয়েছি প্রথমে | আর এই বার্নল লাগিয়ে নিলেই হবে | এমন কিছু হয়নি আমার |"
কথাটা শেষ করেই ও অনিকেতের হাত থেকে বার্নলটা নিয়ে নিজেই নিজের হাতে লাগাতে শুরু করলো | এসব দেখে অনিকেতের হঠাৎ মনে হলো তাহলে কি ও তিলোত্তমাকে ভুল বুঝেছিলো সকালে ! এই মেয়েটা আর যাই হোক , এটেনশন পেতে চায় না কারোর থেকে | তাহলে তো এতটা পুড়ে যাওয়ার পর বাড়ি মাথায় তুলতো এতক্ষনে চিৎকার চেঁচামিচি করে ! বরং উল্টে নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে হাতটা লুকিয়েই ঘুরছিলো সকাল থেকে | না , এরপর আর না ভেবে কিছু বলা ঠিক হবে না তিলোত্তমাকে | কথাটা মনে মনে ঠিক করেই অফিস গেলো সেদিন অনিকেত |
- ঈপ্সিতা
Comments
Post a Comment